Saturday, April 3, 2021

কেমন আছেন সাভারে আওয়ামী লীগের দূর্দিনের কান্ডারী আহসান হাবিবের পরিবার..!

সাভার আওয়ামী লীগের দূর্দিনের কান্ডারী 











এক সময়ের দাপুটে ও প্রভাবশালী এ নেতার পরিবারের সদস্যদের বর্তমান রাজনৈতিক অবস্হানই বা কি? জেলা-উপজেলা পর্যায়ের সাংগঠনিক কার্যক্রমগুলো যখন ছিল বর্ষীয়ান এ নেতার উপর নির্ভরশীল, তার উপস্থিতি ছাড়া বিএনপি-জামাতের সরকার বিরোধী আন্দোলন মাঠে গড়াতো না, কালের আবর্তে কতিপয় সুবিধাবাদী রাজনৈতিক নেতার কারনে রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়াত্বের মুখোমুখি আহসান হাবিবের পরিবারের সদস্যরা। সংশ্লিষ্ট নেতৃত্ব আর সুবিধাবাদী হাইব্রিড নেতাদের কারনে আওয়ামী রাজনীতি থেকে যেন হারিয়ে যেতে বসেছে পরিবারটি।


খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৯৭১ সালে আহসান হাবিবের বাবা হাজী ফজর আলী কোম্পানী প্রকাশ্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষাবলম্বন করায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ঢাকা জেলার ধামরাই উপজেলার ভাড়ারিয়া ইউনিয়নের কাকরান গ্রামের নিজ বাড়ি আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়। স্হানীয় কালামপুর ক্যেম্প ধরে নিয়ে যায় আহসান হাবিবসহ ৫১ জন নিরপরাধ নিরস্ত্র সাধারন মানুষকে। এদের প্রত্যেককেই একে একে হত্যা করা হলেও নিজের বুদ্ধিমত্তায় সেদিন পাকিস্তানিদের হাত থেকে বেঁচে যান দক্ষ সংগঠক উদীয়মান তরুণ আহসান হাবীব। এরপর থেকেই হাজার বছরের শ্রেষ্ট বাঙালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে পথ চলা শুরু আহসান হাবিবের।
পরবর্তীতে ১৯৮৩-৮৪ সালে রাজনৈতিকভাবে হয়রানির উদ্দেশ্য মিথ্যা মামলায় দিয়ে ফাঁসিয়ে দিলে ৬ মাস হাজতবরন করতে হয় তাকে। শত বাঁধা বিপত্তি তাকে পিছু হটাতে পারেনি। ১৯৮৬ সালে তৎকালীন সময়ে এ অঞ্চলে যখন আওয়ামী লীগ তথা নৌকার পক্ষে কথা বলার মানুষ খুজে পাওয়া ছিল দূরুহ ব্যাপার তখন কাকরান গ্রামে সর্বপ্রথম মাইকের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর ভাষন প্রচার করে জাতির পিতার আদর্শে আদর্শিত ব্যক্তিদের সুসংগঠিত করে স্হানীয় আওয়ামী লীগকে পরিপূর্ণ রুপ দেয়। এলাকাবাসীর দাবীর প্রেক্ষিতে ১৯৮৬ সালে ১ম বার ধামরাই ১১ নং ভাড়ারিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচনে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হন। তার জনপ্রিয়তায় ইর্ষান্বিত হয়ে বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীরা তার বাড়ীতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাট চালায়। একপর্যায়ে বাড়ী-ঘর আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে এলাকাবাসীর প্রতিরোধের মুখে পিছু হটে হামলাকারীরা।
জনপ্রতনি থাকাবস্হায়ই ১৯৯০ সালে ঢাকার ধামরাই ও সাভারে স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে রাজপথে সোচ্চার ভূমিকা রাখায় কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের নজরে আসে রাজপথ কাপানো অগ্র সৈনিক আহসান হাবিব।১৯৯১ সালে ২য় বারের মত ধামরাই ১১নং ভাড়ারিয়া ইউনিয়নে বিপুল ভুটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।টানা ২ বারের চেয়ারম্যান ১০ টি বছর ধামরাই ১১ নং ভাড়ারিয়ার চৌকিদারের ট্যাক্স আহসান হাবিব তর নিজ হতে দিয়েছিলেন।১৯৯৫ সালের শেষের দিকে তৎকালিন সৈরাচার সরকার। বি এন পি পতনের নেএী অসহযোগ আন্দোলনে সাভার আমিনবাজার বাইপ্যল জিরান নয়ারহাট কাঠগড়া বিরুলিয়া একাধারে সাভারে সাধারন জনগন নিয়ে যে ধরনের বলয় তৈরি করেছিলেন তা নজীর বিহীন ১৯ দিন দিনমুজুরের খুরাকি সাধারন মানুষের জন্য সাভার বাস সটা্যনড হোটেল এবং তৃনমুলের জন্য ৬ জাগায় প্রতিদিন ২০০ ডেকচি খিচুরি ব্যবস্থা ছিল।
১৯৯৫ সালে সাভার পৌরসভার প্রতিষ্ঠাকালীন আওয়ামীলীগ হতে দলিয় নমিনেশন পেয়ে রিক্সা মার্কায় মেয়র হিসেবে নির্বাচন করলেও তৎকালীন বিএনপি সরকারের সুক্ষ কারসাজির কারনে মাত্র ২২৯ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান নেতা আহসান হাবীব। তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ১৯৯৬ সালে এ অঞ্চলে সরকারবিরোধী অসহযোগ আন্দোলন গড়ে তোলার মাধ্যমে স্হানীয় পযর্যায়ে আওয়ামী লীগের শক্ত অবস্থানের কথা জানান দেন আহসান হাবীব। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার নির্দেশে সাভার থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মনোনীত হন। ১৯৯৬ সালে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মনোনীত হন। ১৯৯৬ সালে সাভার হতে জাতীয় সংসদ ইলেকশনে আওয়ামীলীগ হতে প্রার্থী হয়েছিলেন।২০০০ সালে শেখ হাসিনা উপজেলা আওয়ামীলীগ কমিটি ঘোষনা দিলে দলীয় প্রধানের নির্দেশে তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের সমর্থন নিয়ে সাভার উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মনোনীত হন।
২০০১ সালে সাভারের আমিনবাজারে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার গাড়ী বহরে হামলার ঘটনায় আহসান হাবীবকে প্রধান আসামী করে মামলা ও পারিবারিকভাবে নির্যাতন করা হয়। করা হয় অার্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্হও। ২০০৭ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করার ঘোষনা দেন। পরবতীতে অসুস্থ হয়ে পরলে রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়াত্বের খড়গ নেমে আসে আওয়ামী লীগের দূর্দিনের কান্ডারী এ পরিবারটির উপর। অনেকটা নিভৃতেই ২০১৫ সালে পরপারে পারি জমান আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা। বাবার মৃত্যুর পর উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া রাজনৈতিক পরিচয় ধরে রাখতে বঙ্গবন্ধুর আদশর্শ নিয়েই পথ চলতে শুরু করেন সৎ, মেধাবী আর উদীয়মান তরুন আওয়ামী লীগ নেতা হাজী মাসুম হাবীব। ২০১২ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সদস্য মনোনীত হন। বাবার ঐতিহ্য ধরে রাখতে ২০১৫ সালে ঢাকার ধামরাই উপজেলার ভাড়ারিয়া ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে চেয়ারম্যান হিসেবে প্রার্থীতার ঘোষনা দিলেও বাধ সাধে তালিকাভূক্ত রাজাকরের পরিবারের সদস্যরা। রাজনৈতিক কূটকৌশলে সেবার রাজাকার পরিবারের কাছে হার মানলেও আসছে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় নেতা-কর্মীদের সাথে নিয়ে মাঠে আছেন তিনি। প্রতিদিনই নেতা-কর্মীদের সাথে নিয়ে করছেন গণসংযোগ। পালন করছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ঘোষিত বিভিন্ন কর্মসূচীও। বাবা মরহুম আহসান হাবীবের কর্মগুনে সাধারণ মানুষের সাড়াও পাচ্ছেন ব্যাপকভাবে।
স্হানীয় প্রবীন আওয়ামী লীগ নেতারা অভিযোগ করে বলেন, একটা সময় ছিল, যখন হাবিব সাব না এলে রাজপথে কোন মিছিল-মিটিং হতো না, হতো না সভা সমাবেশ, তার দান-অনুদানে আজ অনেকেই জেলা-উপজেলা এবং পৌরসভার শীর্ষ পদে আসীন হয়েছে, কিন্তু আজ আওয়ামী রাজনীতিতে নেই হাবিব পরিবারের কেউ-যা কষ্ট

Labels: ,